মার্চ ০৩, ২০২২,
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের কারণে দেশটি থেকে পালিয়ে যাওয়া ইহুদিদের বিভিন্ন অবৈধ বসতিতে ইসরাইল আশ্রয় দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা। জেরুজালেম পোস্টের এক প্রতিবেদনে এই উদ্বেগের কথা তুলে ধরা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে এখনো প্রকাশ্যে কোনো পক্ষকে সমর্থন দেয়নি রামাল্লাহভিত্তিক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। এর প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসসহ বেশিরভাগ ফিলিস্তিনি নেতা এখন পর্যন্ত এই সংঘাত নিয়ে নিরব রয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক নিহাদ আবু ঘোস জানান, ইসরাইল মূলত যুদ্ধগুলোকে ব্যবহার করে পশ্চিম তীরে বসতি বৃদ্ধি করে। জায়নবাদী আন্দোলনের প্রথম থেকেই ইসরাইলিরা ফিলিস্তিনিদের উৎখাত করে ইহুদি শরনার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে।
যদি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সংঘাত অব্যাহত থাকে তাহলে হাজার হাজার ইউক্রেনীয় ইহুদিকে দেশ ছেড়ে পালাতে হবে।
ধারণা করা হচ্ছে, তাদেরকে ইসরাইলে আশ্রয় দেয়া হবে। এরইমধ্যে সে ধরণের ঘোষণাও ইসরাইলের তরফ থেকে দেয়া হয়েছে। ফিলিস্তিনিরা এখন আশঙ্কা করছেন, পশ্চিম তীরে গড়ে ওঠা ইহুদি বসতিতেই ইউক্রেন থেকে আসা এই ইহুদিদের আশ্রয় দেয়া হবে।
আবু ঘোস বলেন, নিশ্চিতভাবেই ইউক্রেনীয় ইহুদিদের নিয়ে আতঙ্কিত ফিলিস্তিনিরা। আমরা একই আতঙ্ক দেখেছিলাম ১৯৯০ এর পরে যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে গিয়েছিল। তবে আন্তর্জাতিক সাহায্য কমে যাওয়া নিয়েও তারা উদ্বিগ্ন। ফিলিস্তিন আন্তর্জাতিক সাহায্যের উপরে ব্যাপক মাত্রায় নির্ভরশীল। কোভিড মহামারি চলাকালীন এ সাহায্য কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছিল তারা। এরমধ্যে ইউক্রেনে যা চলছে, তাতে আন্তর্জাতিক নজর কমে যেতে পারে ফিলিস্তিনের উপর থেকে। সাহায্যের একটি বড় অংশ সেখানে চলে যেতে পারে। ইউক্রেনের লাখ লাখ মানুষ শরনার্থী হবেন, তাদের সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক সাহায্য প্রয়োজন হবে।
এরপর নতুন করে ইউক্রেনকে গড়ে তোলার ব্যয়তো আছেই। ইসরাইলি গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ইউক্রেনে থাকা ইহুদিদের ইসরাইলে নিয়ে আসতে জরুরি পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়েছে। এর অধীনে এক সপ্তাহের মধ্যে ৫ হাজারের বেশি ইহুদিকে ইসরাইলে আনা হবে।
ফিলিস্তিনি অর্থনীতিবিদ থাবিত আবু আল-রস মনে করেন, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ ফিলিস্তিনের অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলবে। শুধু বিদেশি সাহায্য কমে যাওয়াই নয়, স্বাভাবিক অর্থনৈতিক বিভিন্ন ফ্যাক্টর ক্ষতিগ্রস্থ হবে এ যুদ্ধের কারণে। বেড়ে যাবে দ্রব্য মূল্যের দাম ও বেকারত্ব। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের অর্থনীতি এমনিতেই ধুঁকছে। এরমধ্যে এই যুদ্ধের কারণে বেশ কিছু খাবারের দাম বেড়ে যাবে। আটার সংকট দেখা দেবে।
এছাড়া ইউক্রেন থেকে ফিলিস্তিনি কোম্পানিগুলো শিম, গম, আটা ও তেল আমদানি করে, এগুলো বাধাগ্রস্থ হবে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি ফিলিস্তিনকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। এরইমধ্যে পশ্চিম তীরে কয়েক দিন আন্দোলন চলেছে। পণ্যের দাম নিয়ে অসন্তোষ বাড়ছে। যদি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ একটি ভাল অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণে ব্যর্থ হয় তাহলে পুরো অঞ্চলটি আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে।
www.bbcsangbad24.com