ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২২,
নেত্রকোনা প্রতিনিধি
১২টি গ্রামের মানুষের যাতায়তের সুবিধার্থে সেতু নির্মাণ করলেও কাজে আসছে না সাধারণ মানুষের। দুই পাশে এপ্রোজের মাটি সরে যাওয়ায় ৬ বছর ধরে সেতুটির উপড় দিয়ে যান চলাচলসহ লোকজনের যাতায়ত বন্ধ রয়েছে। এতে দূর্ভোগে পড়েছেন ১২ টি গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার লোকজন। এমন চিত্র নেত্রকোনার মদন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের খুড়াইখালী খালের উপড় নির্মিত সেতুটির। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলায় সেতুটি অকেজু হয়েছে বলে দাবী এলাকাবাসীর।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, তিয়শ্রী ও ফতেপুর ইনিয়নের ১০/১২ টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে ২০১২/১৩ অর্থ বছরে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রালয়ের অর্থায়নে ২৬ লাখ ২ হাজার ৩৬ টাকা ব্যয়ে দৌলতপুর-বারেউড়া সড়কের খুরাইখালী খালের উপড় সেতুটি নির্মিত হয়। সেতুটি নির্মাণের পর থেকে দুই পাশের এপ্রোজে মাটি সরে গেলেও এর দিকে নজর দেননি এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় লোকজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দৌলতপুর-বারেউড়া সড়কটি তিয়শ্রী ও ফতেপুর ইউনিয়নের ১০/১২ টি গ্রামের সংযোগ সড়ক। ২ কিলোমিটার সড়ক প্রায় ২৫ হাজার মানুষের মাঝে সর্ম্পক গড়ে তুলেছে। এই সড়কের যাতায়াতের সুবিধার্থে খুরাইখালী খালের উপড় সেতুটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের কয়েক বছর পরই এপ্রোজের মাটি সরে অকেজু হয়ে পড়েছে সেতুটি। ফলে সেতুটি কাজে আসছে না এ রাস্তার যাতায়াতকারী লোকজনদের। যাতায়াতকারীরা আর কোন উপায় না পেয়ে সেতুটির পাশের ফসল রক্ষা বাঁধের স্লুইচ গেট দিয়ে চলাচল করছেন। যান চলাচলের ফলে স্লুইচ গেটটি হুমকির মুখে পড়ায় এলাকার কৃষকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া রাস্তায় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় যানচলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় সেতু ও রাস্তার বেহাল অবস্থা দূরীকরণের জন্য কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন স্থানীয় লোকজন।
দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা রিকন মিয়া, আজিদ মিয়া, আবুল, সাফায়েতসহ অনেকই জানান, তিয়শ্রী ও ফতেপুর ইউনিয়েনে ২০/২৫ হাজার মানুষ দৌলতপুর-বারেউড়া সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। কয়েক বছর ধরে খুড়াইখালী খালের সেতুটির এপ্রোজে মাটি না থাকায় চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন লোকজন। পাশের ফসল রক্ষার বাঁধের স্লুইচ গেট দিয়ে যানবাহনসহ লোকজন যাতায়াত করেছে। এতে স্লুইচ গেটটি হুমকির মুখে পড়েছে। সেতুটির এপ্রোজে মাটি দিয়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী।
অটো রিকশা চালক এরশাদ, কাশেম মিয়া, নিজাম জানান, বারেউড়া থেকে কালীবাড়ী মোড়, বালালী বাজার ও তিয়শ্রী ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা এটি। সেতুর নিচে মাটি না থাকায় গাড়ি নিয়ে যেতে পারি না। মদন হয়ে তিয়শ্রী ইউনিয়ন পরিষদে যেতে ৫ কিলোমিটারের জায়গায় ৩০/৩৫ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। এখন স্লুইচ গেট দিয়ে কোন রকম চলাচল করা যাচ্ছে। সেতুটির পাশে মাটি ভরাট করে চলাচলের উপযোগী করে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
তিয়শ্রী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফখর উদ্দিন আহমেদ জানান, দৌলতপুর-বারেউড়া সড়ক আমার ইউনিয়েনের ১০/১২ গ্রামের একমাত্র সড়ক। এই সড়কটির খুরাইখালী খালের সেতুটির এপ্রোজে মাটি না থাকায় অকেজু হয়েছে। কর্তৃপক্ষের নিকট বারবার যোগাযোগ করেও কাজ হয়নি। লোকজনের যাতায়াতের সুবিধার্থে সেতুটির এপ্রোজে মাটি ভরাটের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানাচ্ছি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শওকত জামিল জানান, দীর্ঘদিন আগে খুরাইখালী সেতুটির দুই পাশে এপ্রোজের মাটি সরে গেছে। এ বছর বরাদ্দ দিয়ে সেতুটির এপ্রোজের মাটি ভরাট করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বুলবুল আহমেদ জানান, ত্রাণের অধিকাংশ সেতুর এপ্রোজের মাটি নেই। উপজেলার যে সেতুগুলোর এপ্রোজে মাটি নেই সেই সেতুগুলোর তালিকা করে বরাদ্দ দিয়ে অচিরেই মাটি ভরাট করা হবে। খুরাইখালী খালের উপড় সেতুটি লোকজনের যাতায়াতের জন্য জরুরি। অচিরেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
www.bbcsangbad24.com