দেশ ও মানুষের কথা বলে

[vc_row][vc_column]

[/vc_column][/vc_row]

সিরাজদিখানে ঘাতক স্ত্রীর স্বামী হত্যার স্বীকারমূলক জবানবন্দি

জানুয়ারী,২৪,২০২৩

আরিফ হোসেন হারিছ সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি:

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে পরকীয়ার কারনে স্বামী মোকসেদুর রহমানকে (৪০) হাত পা বেধে হত্যা করে ইছামতি নদীতে ফেলে রেখেছিলো পাষন্ড স্ত্রীর প্রবাসী প্রেমিক জাহিদ সরকার । এ ঘটনায় নিহতের ঘাতক স্ত্রী আসমা বেগমকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ওলিয়ার রহমান গ্রেফতার করে সোমবার ( ২৩ জানুয়ারী) মুন্সীগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হলে ঘাতক স্ত্রী আসমা বেগম স্বামীকে হত্যা করার বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ।
সোমবার বিকালে মুন্সীগঞ্জ আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট জশিতা ইসলাম এর আদালতে এ দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আর এ হত্যায় সহযোগিতা করেছেন পরকিয়া প্রেমিকের আরো ২ সহযোগী বলে জানাগেছে । এ ঘটনায় জড়িত স্ত্রী আসমা বেগমকে রবিবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ঢাকার গেন্ডারিয়া থেকে গ্রেফতার করে সিরাজদিখান থানা পুলিশ । গত ১৭ জানুয়ারী সকাল ১০ টার দিকে সিরাজদিখান উপজেলার চিত্রকোর্ট ইউনিয়নের বরাম বাজার সংলগ্ন্ ইছামতি নদীর তীর থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় অজ্ঞাত পরিচয় যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
পরে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ওদিকে যুবকের স্ত্রী আসমা বেগম তার স্বামী নিখোঁজ রয়েছে মর্মে রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন। ওই সাধারন ডায়েরী ও যুবকের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গনমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে পুলিশের তদন্তে যুবকের পরিচয় উঠে আসে।
জানাযায়, ২২ বছর আগে ঢাকার গেন্ডাারিয়ার এলাকার মৃত মো.হাবিবুল্লাহর পুত্র নিহত যুবক মোকসেদুর রহমানের সাথে বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার ঠাকুর মল্লিক গ্রামের মৃত লতিফ শিকদারের মেয়ে আসমা বেগমের (৩৫) বিয়ে হয়। বিয়ের ২২ বছর সংসার জীবনে তাদের ৩ ছেলে সন্তান রয়েছে । প্রায় ৩ বছর আগে নিহতের স্ত্রী আসমা বেগমের সাথে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নের কালিপুর গ্রামের আনোয়ার সরকারের ছেলে সৌদী প্রবাসী জাহিদ সরকারের প্রেমের সম্পর্ক হয় ।
নিহত মোকসেদুর রহমানকে বিদেশে নেওয়ার আশ্বাস দেয় পরকিয়া প্রেমিক জাহিদ। জাহিদ নিজ খরচে মোকসেদুর রহমানকে পাসপোর্টও তৈরী করে দেয় । এর মধ্যে তাদের সম্পর্ক আরো গভীর হয় । এদিকে, বিদেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে গত ৩ জানুয়ারী যুবক মোকসেদুরকে তার স্ত্রী ঘাতক আসমা সিরাজদিখানের প্রেমিক জাহিদের কাছে পাঠান। নিজে থেকে যান গেন্ডারিয়ায়। নিহত সিরাজদিখান উপজেলার কালীপুর গ্রামে জাহিদের বাড়িতে আসলে রাতে তাকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ান জাহিদ গংরা। পরে ২ জনের সহযোগিতায় জাহিদ ওই যুবককে হত্যা করে হাত-পা বেঁধে লাশ নদীর তীরে ফেলে দেন রাতেই। এ ঘটনা ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্য মোকসেদুর রহমানকে হত্যাা করেই প্রেমিক জাহিদ সরকার ১১ জানুয়ারী সৌদীতে চলে যান । পরে ১৭ জানুয়ারী নিহতের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ কোর্ট পুলিশের ইন্সপ্রেক্টর ( ওসি) জামালউদ্দিন বলেন, আটক আসমা বেগম মুন্সীগঞ্জ আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট জশিতা ইসলাম এর আদালতে সোমবার বিকালে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে একটি চাঞ্চল্যকর হত্যার ঘটনার রহস্য উন্মেচিত হলো।
সিরাজদিখান থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মিজানুল হক জানান, যুবকের পরিচয় পাওয়ার পরই লাশ উদ্ধার নিয়ে এ ঘটনা নতুন মোড় নেয়। তদন্ত চলাকালে বেরিয়ে আসে নানা তথ্য। রবিবার রাতে গ্রেফতারের পর সিরাজদিখান থানা পুলিশের হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদে যুবককে হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়।

www.bbcsangbad24.com

Leave A Reply

Your email address will not be published.