দেশ ও মানুষের কথা বলে

[vc_row][vc_column]

[/vc_column][/vc_row]

স্ত্রী খুনের দায়ে স্বামী জেলেঃ ৩ শিশুর মানবেতর জীবনযাপন

মার্চ,৩০,২০২২

আরিফ হোসেন,শ্রীনগর ( মুন্সীগঞ্জ)

শ্রীনগরে প্রতিবেশীকে ফাঁসানোর জন্য স্ত্রীকে খুন করে জেল হাজতে রয়েছে স্বামী। ১০ মাস ধরে মানবেতর জীবন যাবন করছে তাদের ৩ শিশু সন্তান। মায়ের মমতা থেকে বঞ্চিত ৩ শিশুর কাছে এখন বাবা থেকেও নেই। ৬৫ বছরের বৃদ্ধ দাদা শাহ আলম মুন্সীর কাজ পাওয়ার উপর নির্ভর করে শিশু ইয়াসিন মুন্সী(১৩),মিম(৮) ও জান্নাত(৪) এর ১ বেলা খাবার জোটবে কিনা। বয়সের কারণে দাদা শাহ আলম মুন্সী(৬৫) ভাড়ি কোন কাজ করতে পারেন না বলে কেউ তাকে কাজও দিতে চান না। একারণে প্রতিদিন তাদের খাবার জোটে না।
শাহ আলম মুন্সী অক্ষেপ করে বলেন,তাদের থেকে ভাল অবস্থান আছেন এমন অনেকেই সরকারী বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পেলেও তারা এখনো কোন সরকারী সুবিধা পাননি।

শ্রীনগর উপজেলার বানিয়াবাড়ি বাঘাডাঙ্গা এলাকার ভ্যান চালক অহিদুল মুন্সী মাত্র ৭ শতাংশ জমির মালিকানা নিয়ে দ্ব›েদ্বর জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য ২০২১ সালের ২ জুন গভীর রাতে তার স্ত্রী পারভীন বেগমকে কৌশলে বাড়ি থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দুরে আড়িয়ল বিলে নিয়ে যায়। সেখানে রাত ২:৩৫ মিনিটে স্ত্রী পারভীন বেগমকে কাঁচি দিয়ে জবাই করে হত্যা করে। লাশ গুম করার জন্য বিলের একটি পুকুরে কচুরি পানা দিয়ে ঢেকে রাখে। পরে অহিদুল মুন্সী প্রদিবেশীদের দায়ী করে অপহরণ নাটক সাজায়।পরদিন সকালে শ্রীনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পারভীন বেগমের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে পুলিশ অহিদুল মুন্সীকে আটক করে। সে মুন্সীগঞ্জ আদালতে তার স্ত্রীকে হত্যা ও নেপথ্যের কারণ বর্ণনা করে স্বীকারোক্তি মূলক জবান বন্দী প্রদান করে।

এঘটনায় শ্রীনগর থানা পুলিশ অহিদুল মুন্সীকে আসামী করে ৭২ ঘন্টার মধ্যে চার্জশীট প্রদান করে।

স্থানীয়রা দাবী করেণ,তড়িঘরি করে চার্জশীট দেওয়ার করনে এলাকায় সহজ সরল হিসাবে পরিচিত অহিদুল মুন্সীকে খুনের বুদ্ধি দাতারা হয়তো তদন্তের বাইরেই থেকে গেছে। অপরদিকে যে ৭ শতক জমি নিয়ে বিরোধ ছিল তাও এখন প্রতিপক্ষের দখলে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে প্রতিপক্ষের আতাত থাকার কারনে পরিবারটি কোন সরকারী সুযোগ সুবিধা পায়না।

অহিদুল মুন্সী ও পারভীন বেগম দম্পতির সম্পা (১৭), মিম (৯), জান্নাত (৫) নামে ৩ কন্যা ও ইয়াসিন (১৩) নামে ১ পুত্র সন্তান রয়েছে। পারভীন বেগমের খুনের ৮দিন আগে ভাগ্যকুল মান্দ্রা এলাকায় বড় মেয়ে সম্পার বিয়ে হয়।

অর্থাভাবে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র ইয়াসিন মুন্সীর লেখাপাড়া বন্ধ হয়ে গেছে গত বছরেরই। এখন দাদা শাহ আলম মুন্সীর কাজে মাঝে মধ্যে সাহাজ্য করে। ৯ বছরের মিমের কাধে ঘরের কাজের দায়িত্ব। ছোট জান্নাতের বোঝার বয়স হয়নি। শাহ আলম মুন্সীর কাজ করার অক্ষমতা,ইয়াসিনের লেখাপড়া বন্ধ, মিমের কাধে সংসারের বোঝা, অবুঝ জান্নাতের চঞ্চলতাকে ছাপিয়ে ক্ষুধার জ¦ালা তাদেরকে প্রতিনিয়ত তাড়া করে ফেরে। যে কোন ভাবে ক্ষুধার জালা মিটলেই এখন তারা খুশি।

শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণব কুমার ঘোষ বলেন, তাদের সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হবে। তাদেরকে সরকারের যে সকল সুবিধার আওতায় আনা যায় খুব শিঘ্রই সে সকল সুবিধা প্রদান করা হবে।

www.bbcsangbad24.com

Leave A Reply

Your email address will not be published.