“চলুন নিজের বিবেচনায়ই নিজেকে ভালো রাখি”

Estimated read time 1 min read


মে,১৯,২০২৪


“ নাজনীন নাহার ”

মহান রাব্বুল আলামিন যখন কাউকে খুব বেশি ভালোবাসবেন। তখন তিনি নানানভাবে তাকে সুরক্ষিত করবেন। সবসময় আমরা আল্লাহর সকল প্রক্রিয়া বুঝতে পারব না। কিন্তু একসময় আপনি-আমি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলব আল্লাহর রহমত, বরকত, নিরাপত্তা, মায়া, দয়া, আগলে রাখার প্রক্রিয়ার সম্মান ও স্বস্তিজনক ফলাফল উপলব্ধি করে।

একটা উদাহরণ দেই:
যেমন ধরুন কারও কাছে আপনার-আমার কিছু ভালোবাসার বা সম্পর্কের ঋণ আছে। এটা থাকবেই। এটাই স্বাভাবিক। তবে মানুষ তার জীবনের সকল ঋণ পরিশোধ করতে পারে না। একজন একভাবে আপনার-আমার জন্য ভালোবাসা ও সম্মান দিয়েছে। আপনি-আমিও আমাদের নিজেদের মতো তার প্রতিদান দিয়েছি বা দেই নানানভাবে। কারণ বিনিময় ছাড়া কেউ কারও জন্য কিছুই করে না এবং করি না আমরা। সে বিনিময়টা সম্মান হোক কিংবা হোক ভালোবাসা।

মূল কথা হলো জীবনে যখন মানুষ কোনো মন্দ, ভুল এবং বিকৃত মানসিকতার মানুষের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে যায় কোনো না কোনোভাবে। আর ওই জটিল মানুষটার সাথে পারস্পরিক কিছু ভালোবাসার ঋণ তৈরি হয়ে যায়। তখন আপনার প্রতি রাব্বুল আলামিনের অশেষ নেয়ামত স্বরুপ ওই মানুষের থেকে কোনো না কোনোভাবে আপনাকে তিনি সরিয়ে নেবেই। আর আপনার-আমার ঋণগুলোও পরিশোধ করে দেবেন আল্লাহ। আলহামদুলি*ল্লাহ।

কীভাবে ঋণ পরিশোধ করবেন আল্লাহ?

তাহলে শুনুন:
ওই মানুষগুলো এবং বিকৃত মস্তিষ্ক ও মননের মানুষগুলো আপনাকে-আমাকে প্রকাশ্যে এবং গোপনে খোঁটা দেবে। খোঁটা দিতেই থাকবে, দিতেই থাকবে এবং বিকৃত একটা আত্মাতৃপ্তি নেবে । তাদের সাধ্যমতো অপমান অপদস্ত করবে। হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে নিজেকে আপনার-আমার বিরুদ্ধে বীভৎস ষড়যন্ত্রে শামিল করবে। তাদের সাধ্যের সর্বোচ্চ হুমকি-ধমকি তারা দেবে। সর্বোচ্চ নিন্মস্তরের খোঁটা দেবে, আঘাত করবে, অপমানিত করবে, রক্তাক্ত করবে। আর এসব করে করে ওই ব্যক্তিরা তাার কাছে থাকা আপনার-আমার ঋণ পরিশোধ করবে। আলহামদুলিল্লাহ। জি আলহামদুলিল্লাহ বলুন এবং শোকর গোঁজার করি চলুন এই সকল ক্ষেত্রে।

আসলে আমরা কিছু মানুষের এ-হেন আচরণ ও কাজে বিচলিত হয়ে যাই, আফসোস করি আমরা অধিকাংশরা। কারণ আমরা মহান রাব্বুল আলামিনের ইচ্ছে, রহমত এবং নিরাপদ করাটা তাৎক্ষণিক বুঝতে পারি না। আমাদেরকে বুঝতে হবে রাব্বুল আলামিনের ইশারা এবং নেয়ামত। বুঝতে হবে তিনিই আমাদেরকে ওই সকল বিকৃত ও মন্দ মননের মানুষদের থেকে কোনো না কোনো অছিলায় মুক্ত করেন। আমাদের অনেক প্রিয় সম্পর্কের এবং প্রিয় মানুষদের মুখোশ উন্মোচন করে দেন হঠাৎ করে। আমাদেরকে সরিয়ে নেন তাদের থেকে। আমাদের কল্যাণের জন্য আল্লাহ এসব করেন। কিছু মানুষের খোঁটা, খোঁচা, অপবাদ, অপমান, মিথ্যে প্রচার, হিংস্র মনোভাব, হিংসা কেবল আপনার-আমার ঋণ পরিশোধ আলহামদুলিল্লাহ।

ওই সকল ব্যক্তিরা জিতে থাকুক। কারণ তারা বিশিষ্ট। আপনি-আমি অ-বিশিষ্ট, পরাজিত, ক্ষুদ্র, সামান্য এবং সাধারণ এটা মনে নিলে দেখবেন অফুরন্ত শান্তি। কারণ আলহামদুলিল্লাহ আপনি-আমি তাদের থেকে আজীবনের জন্য মুক্ত। মহান রাব্বুল আলামিন তাঁর মহান কৃপায় আমাদেরকে মুক্ত করেছেন। আ*মিন।

আল্লাহর এই নেয়ামত ও ফয়সালা বিশ্বাস করুন, অনুধাবন করুন এবং ভালো থাকুন। ভালো রাখি চলুন নিজেকে। আপনি পরিত্যাগ করুন এ-হেন মানুষ। পরিত্যাগ করুন নিজের মন, মগজ এবং আত্মা থেকে। দেখবেন কম খেয়ে, কম পরে, কম সফলতায়ও ভীষণ আনন্দে থাকবেন। আমাদের ঘুম হবে প্রশান্তিময়। জীবন ক্ষণিকের তাই মোহমুক্তি হোক আমাদের বিশুদ্ধ ব্রত।

কেউ আমাকে-আপনাকে মন্দের কাতারে ফেলে, অপমান, অপদস্ত করে, খোঁটা দিয়ে দিয়ে, পিঠ পিছে ছুরি মেরে আমাদেরকে বর্জন করুক। ঠিকঠাক মতো বর্জন করুক। কারণ তাদেরও নিজের মতো ভাবার অধিকার আছে। আমাকে-আপনাকে, অপরকে অপমানিত করে, খোঁটা দিয়ে নিজেকে ভালো রাখুক, বড়ো হোক, সম্মানিত হোক। তাদের জন্য তাদের ফয়সালা চূড়ান্ত হোক, আরামের হোক, স্বস্তির হোক। তারা তাদেরকে ভালো প্রমাণিত করে করে ভালো থাকুক। তাদেরও খুব আরামের ঘুম হোক। সংসার ও সমাজে প্রকৃত সম্মান হোক। তারাও সম্পর্কে ভালো থাকুক। আপনি-আমি যেমন তাদের পাতাগুলো উল্টে নিয়ে পড়া বাদ দিয়েছি। তারাও আমাদের একটা পাতাও আর না উল্টে দেখুক, না পড়ুক। তারা তাদের সততা, সুন্দরতা, সুকর্ম, সুআচরণ এবং ক্ষমতা নিয়ে ভালো থাকুক। প্রতিশোধ নিয়ে ভালো থাকলে তা-ও থাকুক।

এবং এভাবেই আপনার-আমার মন থেকে তাদের জন্যও দোয়া আসবে, ক্ষমা আসবে ইনশাআ*ল্লাহ। এবং নিয়মিত আসুক। কারণ বিশুদ্ধতার প্রাকটিস করাতে করাতে মহান রাব্বুল আলামিন আপনার-আমার অন্তর ও রূহ গ্লানিমুক্ত, হিংসামুক্ত, লোভমুক্ত, প্রতিশোধমুক্ত মানবিকতায় ও মনুষ্যত্বে পূর্ণ করে দিয়েছেন এবং দেবেন। আমাদের মধ্যে লজ্জা এবং বিবেক নামক একটা শক্তিশালী উপলব্ধি দিয়েছেন। তাই আমরা চেষ্টা করছি, চর্চা করছি বিশুদ্ধ বোধের। আমাদের মন-মগজকে ধৌত করে কলুষযুক্ত করার চেষ্টা করছি আমরা।

চলুন নিজেকে ভালো রাখি। নিজের ঘুমটা কোনোরকম ঘুমের ওষুধ ছাড়া ঘুমাই। শত্রুকেও আর শাপশাপান্ত না করি। নিজের মুখের সাথে সাথে নিজের মন, মগজ, কর্ম ও আচরণ নিজের আয়নায় নিজে দেখি। একবার, দু’বার করে বারংবার নিজের বিচারটা নিজে করি। দেখবেন অপরের প্রতি অপ্রয়োজনীয় খেয়াল, হিংসা, ক্ষোভ, প্রতিশোধ স্পৃহা অটোমেটিক বন্ধ হয়ে যাবে।

পরিশেষে বলব,
ক্ষমা করা, দোয়া করা আর পুনরায় বিষাক্ত ও বিকৃত সঙ্গ গ্রহণ করা এক বিষয় নয়।

চলুন নিজের মনকে প্রশান্ত রাখি। নিজেকে সংশোধন করি। নিজেকে রাখি সৃষ্টিকর্তার সিদ্ধান্ত এবং বিশ্বাসে অটুট। থাকি নতজানু, নমনীয় এবং মানবিক। প্রকৃত মানুষ হয়ে অন্তত মৃত্যু হোক আমার।

www.bbcsangbad24.com

আরও দেখুন আমাদের সাথে......

More From Author