ডিসেম্বর,১৮,২০২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানিয়েছেন।
রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) এক অভিনন্দন বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজয়ের মাসে এ জয় আমাদের খেলোয়াড়দের আরও বেশি উজ্জীবিত করবে।
দুবাইয়ের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে ফর্মের তুঙ্গে থাকা ওপেনার আশিকুর রহমানের অনবদ্য ১২৯ রানে ভর করেই ৮ উইকেটে ২৮২ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়েছিল বাংলাদেশের যুবারা। জবাবে রান তাঁড়া করতে আমিরাতকে ২৪.৫ ওভারে মাত্র ৮৭ রানে অলআউট করে যুব টাইগাররা জিতেছে ১৯৫ রানে।
২০২০ সালেই অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশের যুবারা। কিন্তু মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই এশিয়া কাপের কাপটা ছুঁয়ে দেখা হয়নি কখনোই টাইগার যুবাদের। অবশেষে সেই অপূর্ণতাও ঘোচাল লাল-সবুজের শিবীর। সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ফাইনালে হারিয়ে প্রথমবার এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মাহফুজুর রহমান রাব্বীর দল।
টাইগারদের দেওয়া ২৮৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশি পেসারদের তোপের মুখে পড়ে প্রতিপক্ষ আরব আমিরাত। সেমির মতো আজও শুরুটা করেন বাঁ-হাতি পেসার মারুফ মৃধাই। এই বাঁ-হাতি পেসার পঞ্চম ওভারেই প্যাভিলীয়নের পথ ধরান আমিরাতের ওপেনার আর্যাংশ শর্মাকে। নিজের পরের ওভারেই আবারো মারুফ ভেলকিতে আরেক ওপেনার অক্ষত রাইয়ের উইকেট উপড়ে ফেলেন।
এরপর আঘাত হানেন রোহনাত। টানা তিন ওভারে এই মিডিয়াম পেসার স্বীকার করেন তানিশ সুরি, ইথান ডি’সুজা ও আমিরাত অধিনায়ক আইয়ান আফজাল খানকে। ২৫টি ওয়ানডে ও ২১টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলা আইয়ান যখন উইকেটকিপার আশিকের ক্যাচে আউট হলেন তখন আমিরাতের স্কোর ৪৫/৫।
আমিরাত ষষ্ঠ ও সপ্তম উইকেটের পতন হয় ১৫তম ওভারে । পরপর দুই বলে যাযিন রাই ও আম্মার বাদামিকে ফিরিয়ে দেন ইকবাল হোসেন। এদিন পেসাররা প্রথম ৭ উইকেট নেওয়ার পর দৃশ্যপটে আসেন এক স্পিনার। অফ স্পিনার শেখ পারভেজ হার্দিক রাইকে সরাসরি বোল্ড করে আমিরাতের স্কোরটাকে ৭১/৮ তে রুপান্তর করেন।
পরের স্পেলে মারুফ মৃধা আবার আক্রমণে এসে নবম উইকেটটি তুলে স্বীকারের পর শেখ পারভেজ শেষ উইকেটটি তুলে নিতেই এশিয়া জয়ের মহা উৎসবে মাতেন বাংলাদেশের যুবা টাইগাররা।
আরব আমিরাতের ইনিংসে যা একটু প্রতিরোধ গড়েন ধ্রুব পরাশর। চারে নামা এই ব্যাটসম্যান সর্বোচ্চ ২৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন।
এর আগে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১৪ রানের মাথায় প্রথম আউট হন বাংলাদেশের যুবারা। কিন্তু পঞ্চম ওভারের শেষ বলে জিশান আলম ১৫ বলে ৭ রান করে ড্রেসিংরুমে ফেরেন। এরপর রিজওয়ানের সাথে দ্বিতীয় উইকেটে মূল্যবান ১২৫ রান যোগ করেন শিবলী।
রিজওয়ান ৬০ রানে কাঁটা পড়লেও ধারাবাহিক ব্যাটিংয়ে অবিচল ছিলেন শিবলী। তৃতীয় উইকেটে আরিফুল ইসলামকে সাথে নিয়ে ৮৬ রানের জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে জান তিনি। আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ে অর্ধশতকের দেখাও পেয়ে যান আরিফুল। তবে ৪০ বলে ৬ চারে ৫০ রানে থেমে যায় তার ইনিংস।
এর মাঝেই ১২৯ বলে এই আসরে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটি তুলে নেন শিবলী। এবারের এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১১৬ রানের দারুণ এক নক খেলেন তরুণ এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ৭১ ও জাপানের বিপক্ষে ৫৫ রান করেন।
এরপর খানিক ধুঁকেছে বাংলাদেশ দল। আহরার আমিন এবং মোহাম্মদ শিহাব দুজনেই খুব দ্রুতই আউট হয়েছেন। তবে শেষের দিকে অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বির দ্রুতগতির এক কার্যকরী ইনিংসে ভর করেই ২৮২ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ দল। তবে অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ১০ বলে ২১ রান।
তবে একপ্রান্ত আগলে ধরে ব্যাট হাতে খুঁটি হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন শিবলী। শেষমেষ নিজের ইনিংসটা টেনে নিয়েছেন ১২৯ পর্যন্ত। এ ব্যাটারের ১৪৯ বলের ইনিংসে ছিল ১২টি চার ও ১টি ছক্কার মার। আর এতেই বাংলাদেশ পেয়েছে ২৮২ রানের চ্যালেঞ্জিং দলীয় সংগ্রহ।
www.bbcsangbad24.com