টংগিবাড়ী উপজেলা আ’লীগের অনাকাঙ্ক্ষিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে নাস্তানাবুদ সভাপতি বারেক

Estimated read time 1 min read


জুন,২৪,২০২৪


বিবিসি সংবাদ ডেস্ক:

মুন্সীগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের অনাকাঙ্ক্ষিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে নাস্তানাবুদ হলেন সভাপতি হাফিজ আল আসাদ বারেক। নিজের বাড়ির ভুয়া দলিল নিয়ে করা প্রশ্নের উত্তর দিতে ব্যার্থ।

মুন্সিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কতৃক অনুমোদিত টংগিবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটির বিপক্ষে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত সংবাদ সম্মেলন করেন সভাপতি হাফিজ আল আসাদ বারেক। আজ বিকাল চারটায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে তিনি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এ সময় তার সাথে উপজেলা আওয়ামী লীগের ৮/১০ জন নেতা কর্মী উপস্থিত ছিলেন। তিনি তার লিখিত বক্তব্যে টংগিবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটির অনুমোদন দেওয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণের অভিযোগ করেন।

এরপর শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। সাংবাদিকদের প্রশ্নের কোন সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যার্থ হন হাফিজ আল আসাদ বারেক। এমনকি তার বিরুদ্ধে আনা ব্যাক্তিগত দূর্নীতির অভিযোগ তিনি খন্ডন করতে পারান নাই। সাংবাদিকরা যখন জানতে চান কেন তিনি যারা বেশি দামে তার কোম্পানি থেকে ফ্ল্যাট কিনেছেন তাদেরকে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে স্থান দিয়েছেন? কেন তিনি জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া দলিল করে আউটশাহীর বাড়ি দখল করেছেন? তখন তাকে বিভ্রান্ত মনে হয়েছে।

এছাড়া সাংবাদিকদের করা নিচের প্রশ্নগুলোর কোন সঠিক ব্যাখ্যা দিতে না পেরে নার্ভাস হয়ে সাংবাদিক সম্মেলন শেষ করেন।

সাংবাদিকদের করা প্রশ্ন:
১।আমাদের কাছে তথ্য আছে, আহসান কবির হালদারের দাদা আরব আলী হালদার একজন কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন। শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করতে গিয়ে তিনি ৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে নিহত হন।

আওয়ামী লীগের মত ঐতিহ্যবাহী ও মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দলের উপজেলা শাখার প্রধান একজন রাজাকারের নাতি কি করে হয়? এটাতে কি আপনারা বিব্রত হন, লজ্জা পান?

২। সম্মানিত সভাপতি হাফিজ আল আসাদ বারেক সাহেব ,
এর আগের কমিটিতে আহসান কবির হালদারের কোন পদ ছিল না। সোনারং টংগিবাড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আহসান কবির ঐ কমিটির সদস্য ছিলেন। উনি মারা যাওয়ায় আহসান কবির হালদারকে জালিয়াতির মাধ্যমে আহসান কবির বলে চালিয়ে দেন আপনি হাফিজ আল আসাদ বারেক। আপনি তখন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

সভাপতি হওয়ার পরে জেলা বরাবর আপনি যে কমিটির প্রস্তাব পাঠান তাতে আগের কমিটির প্রায় ত্রিশ জনকে বাদ দেন। এসব পদে যারা আপনার কোম্পানি থেকে বাজার মূল্যের চেয়ে বেশী দামে ফ্ল্যাট কিনতে রাজী হয়েছিলেন তাদের নাম প্রস্তাব করেন।

এ বিষয়ে আপনার ব্যাখ্যা কি?

৩। আহসান কবির হালদার বর্তমানে হত্যা মামলার আসামি হিসেবে কারাগারে। কানাডার নাগরিক হিসাবে তিনি বেশির ভাগ সময় কানাডা থাকেন। কানাডায় অভিবাসী চাঠাতিপাড়া গ্রামের বেপারি বাড়ির এক মেয়েকে বিয়ে করে তার স্পাউস হিসেবে কবির হালদার কানাডা যান ও নাগরিকত্ব পান। নাগরিকত্ব পেয়েই তিনি ঐ স্ত্রীকে ত্যাগ করেন। পরে পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করে তাকে কানাডা নিয়ে যান। এমন একজন বিতর্কিত ব্যাক্তি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কিভাবে হন?


৪।কবির হালদারের ভাতিজা কামারখাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খুকু হালদার নৌকা মার্কার প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান হয়েছেন। খুকু হালদারের বাবা ভুতু হালদার নৌকার বিরুদ্ধে দাড়িয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। উভয় ক্ষেত্রে কবির হালদার প্রকাশ্যে নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছেন।
হাসাইল বানারি ইউনিয়নে নৌকা মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন কবির হালদারের আপন চাচাতো ভাই আনোয়ার হালদার। কবির হালদাররা নৌকা ও চাচাতো ভাইয়ের বিপক্ষে বিএনপির নুরুজ্জামান সাহেবের নির্বাচন করেছেন।
এছাড়া আব্দুল্লাহপুর, পাচগাও, কে শিমুলিয়া, আড়িয়ল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কবির হালদার প্রকাশ্যে নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। প্রমাণ সহ এই সকল অভিযোগ কেন্দ্রীয় ও জেলা আওয়ামী লীগের কাছে আছে বলে আমরা জেনেছি। এ বিষয়ে আপনাদের ব্যাখ্যা কি?

৫।কবির হালদারের কানাডায় কোন পেশা নাই। কানাডার সরকারের রিফিউজি ভাতা নিয়ে চলেন। দেশেও তার কোন পেশা নাই। থাকার মত নিজের ঘর বাড়ি নাই। মানুষের বাড়িতে থাকেন। এমপির উন্নয়ন প্রকল্প ও চাকুরী দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে চাদা নেওয়ার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। এই লেভেলের একজন মানুষ কিভাবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হতে পারে?


৬।জনাব হাফিজ আল আসাদ বারেক সাহেব, টংগিবাড়ীতে অভিযোগ আছে আপনি একজন ভূমিদস্যু। আউটশাহী উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্নে যেই বাড়িতে আপনি থাকেন এটা অর্পিত সম্পত্তি ছিল। দলীয় পদ ব্যবহার করে ভুয়া দলিল বানিয়ে আপনি নিজ নামে এই বাড়ী নামজারি করিয়েছেন।
আপনি কি বাড়ির দলিলটি দয়া করে ফেসবুকে দিয়ে দিবেন যাতে টংগিবাড়ীর মানুষ যাচাই করে দেখতে পারেন এটি ভুয়া কিনা।
নাকি জমি জালিয়াতির অভিযোগ মেনে নিয়ে স্বচ্ছতার স্বার্থে আপনি সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করবেন?


৭। উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি অনুমোদন দেওয়ার এখতিয়ার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের। তারা অনুমোদন দিয়েছেন। আপনারা সংক্ষুব্ধ হইলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কাছে প্রতিকার চাইবেন। দলের আভ্যন্তরীণ বিষয় সাংবাদিকদের জানাতে আসছেন কেন? আপনাদের কাছে কি দলের চাইতে নিজের স্বার্থ বড়?

www.bbcsangbad24.com

আরও দেখুন আমাদের সাথে......

More From Author