মার্চ ৩১,২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক
বুয়েট জঙ্গিবাদের কারখানায় পরিণত করা হচ্ছে কিনা, এটা আমরা তদন্ত করে দেখছি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এরকম কিছু পাওয়া গেলে সরকারকে অ্যাকশনে যেতে হব।
রবিবার (৩১ মার্চ) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে চট্টগ্রাম বিভাগের আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাজনীতি করি বলে বুয়েটে যেতে পারব না, এটা কোন ধরনের আইন?
ওবায়দুল কাদের বলেন, বুয়েটের ঘটনায় তদন্ত চলছে। আমরা খতিয়ে দেখছি। সেখানে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার নামে অপরাজনীতির জঙ্গিবাদের কারখানায় পরিণত করা হবে- এটা যাতে না হয় আমরা তদন্ত করে দেখছি। এরকম কিছু পাওয়া গেলে সরকারকে অ্যাকশনে যেতে হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বুয়েটে সেদিন কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না। আর আমি রাজনীতি করি বলে বুয়েটে যেতে পারব না এটা কোন ধরনের আইন? কোন ধরনের নিয়ম?
মতবিনিময় সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করার বিষয়ে সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। বলেন, “আমরা এমপি, মন্ত্রী সাহেবরা যদি হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকি তাহলে বিনা প্রতীকে নির্বাচন করার যে উদ্দেশ্য নেত্রীর, তা স্বার্থক হবে। কেউ ক্ষমতার দাপট ও ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন না। যার নির্বাচন করার ইচ্ছা আছে করবেন। সে স্বাধীনতা আছে। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। জনগণ যাকে ইচ্ছা নির্বাচিত করবে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন, যদি কোনো অনিয়ম মনে করে তারা ব্যবস্থা নেবে।”
তিনি বলেন, চার ধাপে অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা নির্বাচন। কাজেই আমাদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। ভালোভাবেই চলছে সবকিছু। এরমধ্যে দায়িত্বশীলদের কিছু কথাবার্তা দলকে সংকটে ফেলে। ফ্রি স্টাইলে যা কিছু বলবেন-এটাতো আওয়ামী লীগ নয়। দলের গঠনতন্ত্র নিয়মকানুন আছে। এগুলোর অ্যাকশন আমরা নিব। ইতিমধ্যেই কিছু অ্যাকশনও নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিতর্ক চলছে। এই বিতর্কের জবাবটা আমরা মোটাদাগে বলি- ‘পাঠক কখনো ঘোষক হতে পারে না’। তাহলে এম এ মান্নান, সন্দীপ এরাও তো স্বাধীনতার ঘোষক! তারপরও বড় কথা, এ ঘোষণার বৈধ অধিকার কার ছিল? বঙ্গবন্ধু ছাড়া আর কারো স্বাধীনতা ঘোষণার অধিকার ছিল না। সে ম্যান্ডেট ৭০ এর নির্বাচনে জনগণ তাকে দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতার লেগ্যাসি। বঙ্গবন্ধুর পর আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি সংগ্রামের লেগ্যাসি হিসেবে তার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছি। এই জনপদে সবার মৃত্যু হবে। নশ্বর পৃথিবীতে কিছুই অবিনশ্বর নয়। আজকে বঙ্গবন্ধু নেই, শেখ হাসিনাও থাকবেন না। কিন্তু তাদের উত্তরাধিকারের কোনোদিনও মৃত্যু হবে না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নেতারা বিভিন্নজন, কেউ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কথা বলেন, আবার কেউ ভারতীয় পণ্য বর্জনের কথা বলেন। সেই পাকিস্তানি আমল থেকে যে ভাষায় আইয়ুব খান কথা বলেছে, আজকে সেই ভাষায় কথা বলছে বিএনপি। তাদের সব ইস্যুই মার খেয়েছে ভোটে পরাজিত হয়ে। এখন তাদের ইস্যু ভারতবিরোধিতা। এন্টি ইন্ডিয়া ফোভিয়া তৈরি করার ইস্যু খুঁজে নিয়েছে।
রিজার্ভ নিয়ে বিএনপি মিথ্যাচার করছে মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতা ছেড়ে যায় তখন বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার। আর তারা এখন রিজার্ভ নিয়ে কটাক্ষ করে, যখন রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। ঈদ উপলক্ষে সে রিজার্ভ আরও বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। তারা না জেনেই মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করছে।
বাজারদর নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কিছু পণ্যের দাম কমেছে। বাজার ওঠানামা করবেই। বিশ্ব সংকট এর জন্য দায়ী, আর শাস্তি পাচ্ছি আমরা। আমাদের একজন শেখ হাসিনা আছেন বলেই এ সংকট অতিক্রম করার সাহস আমরা পাচ্ছি। ইনশাল্লাহ এ সংকট কেটে যাবে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন নিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সম্মেলন করে সেখানে কমিটি গঠন করা হবে। ঢাকা থেকে প্রেস রিলিজ দিয়ে কেন কমিটি গঠন করতে হবে?
আ. লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডাক্তার দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনসহ চট্টগ্রাম বিভাগের আওয়ামী লীগের নেতারা।
www.bbcsangbad24.com