মুন্সীগঞ্জ এভিজেএমে শিক্ষকদের দলাদলি নাকাল অভিভাবক মহল\ উৎকন্ঠা কাটেনি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের

Estimated read time 1 min read


সেপ্টেম্বর,১৯,২০২৪


মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি


শহরের ঐতিহ্যবাহী এভিজেএম গভ. গার্লস হাই স্কুলে ঘটে যাচ্ছে একের পর এক ঘটনা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, শিক্ষককে হেনস্তা, কোচিং বাণিজ্য সহ নানান কারনে আলোচনায় এই প্রতিষ্ঠানটি। কোচিং বাণিজ্যের আধিপত্যকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ে তৈরী হয়েছে গ্রæপিং। গ্রæপিংয়ের মাত্রা এতটাই ভয়াবহ যে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করা হচ্ছে শিক্ষকদের ঘায়েল করার জন্যে। পূর্বের এবং স¤প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনায় শিক্ষকদের জড়িত থাকার অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক অভিভাবক জানিয়েছেন, এটা দিবালোকের মত স্পষ্ট, অভ্যন্তরীন শিক্ষকদের ইন্ধনে ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠানে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষকরা স্পষ্টতই শিক্ষার্থীদের পক্ষে বিপক্ষে ব্যবহার করেছে।

খোজ নিয়ে জানা যায়, বিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধেক শিক্ষক স্বপ্রনোদিত হয়ে জেলা প্রশাসনে মনোরঞ্জন ধরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। এই অভিযোগই প্রমান করে বিদ্যালয়ের গ্রæপিং কতটা তীব্র। এর পূর্বেও একজন শিক্ষককে বদলী করা বা বদলী ঠেকানোর আন্দোলন হয়েছিল।

গত বছরের অক্টোবরে একজন শিক্ষকের বদলি আদেশ বাতিলের দাবিতে করা আন্দোলনে ইন্ধন জুগিয়েছে বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক। এক্ষেত্রে ঐ শিক্ষকদ্বয় তার নিজ নিজ কোচিংয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। এ প্রতিষ্ঠানটি জেলায় শিক্ষাদানে যতটুকু এগিয়ে, তার থেকে বেশি এগিয়ে আলোচিত সব কর্মকান্ডে। অপরদিকে মনোরঞ্জন ধরও তার প্রাইভেটের শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে তার পক্ষে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করিয়েছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, এই বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যে জড়িত। এদের কোচিং বাণিজ্যে তীব্রতা এতটাই তীব্র যে, এরা সিন্ডিকেট বানিজ্য ধরে রাখতে যে কোন বাধাকেই উপরে ফেলতে পারে। সা¤প্রতিক ঘটনার মূলে রয়েছে এই কোচিং বাণিজ্যে।

উল্লেখ্য যে এভিজেএম, কাজী কমরউদ্দীন ইনস্টিটিউট ও প্রেসিডেন্ট স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের কোচিং করান মাকহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। অভিযোগকারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে নিজ কোচিংয়ে পিৎজা পার্টি করে উৎসাহ দিয়েছেন এই শিক্ষক এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে যা কর্তৃপক্ষ তদন্ত করলে বিষয়টির সত্যতা মিলবে। এই কোচিং বানিজ্য বন্ধের জন্য মনোরঞ্জন ধর বিগত সময়ে জোরালো ভূমিকা রেখেছেন। এই ভূমিকাই তার জন্য কাল হয়েছে বলে অনেকেই ধারণা করছেন।

মূলত ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রæপে পরিকল্পিত ভাবে অপপ্রচার চালিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষেপিয়ে তোলা হয়। অভিযোগ রয়েছে এই অপপ্রচারের নেতৃত্বে রয়েছে বিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষক। একজন শিক্ষক তার বন্ধুদের বিভিন্ন ফেক আইডি এক্ষেত্রে ব্যবহার করেছেন বলেও অভিযোগ আসছে। এছাড়াও একজন শিক্ষকের পরিচালনায় বিদ্যালয়ের নামে খোলা ফেসবুক গ্রæপ থেকে এ সংক্রান্ত নিউজ, ছবি অনবরত প্রকাশ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অভিভাবক শামসুদ্দিন হায়দার বলেন, শিক্ষক জড়িত না থাকলে, স্কুলের গ্রæপে কেন শিক্ষকের নামে মানহানিকর পোষ্ট শেয়ার করা হচ্ছে।

বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের মতে, দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকার সুবাধে এবং অবাধ কোচিং বাণিজ্যে করে অর্থবিত্তের মালিক হওয়ায়, শিক্ষকরা এখন জড়িয়ে পড়ছে অপরাধমূলক কর্মকান্ডে। দ্রæত কোচিং বাণিজ্যে বন্ধে পদক্ষেপ না নিলে, সামনে আরো ভয়ংকর কিছু ঘটার আশংকা করছেন কেউ কেউ। দ্রæত এই দুই গ্রæপের শিক্ষকদের এভিজেএম সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে সরিয়ে দেয়া উচিত বলে মনে করছেন অভিভাবক মহল।

তদন্তচলাকালেই অভিযুক্ত শিক্ষক মনোরঞ্জন ধরের কাছ থেকে উদ্ধুদ্ধ পরিস্থিতিতে বদলির আবেদন নেওয়া হয়। হঠাৎ করেই গত ২৯শে আগষ্ট একগুচ্ছ অভিযোগ জানানো হয় বিদ্যালয়ে এবং পরবর্তীতে জেলা প্রশাসনে। এর পরদিনই শিক্ষার্থীদের অপর অংশ শিক্ষকের পক্ষে স্বারকলিপি দেয়। যা মনোরঞ্জনের প্রাইভেট পড়ানো শিক্ষার্থীগণ। এর ফলশ্রæতিতে ৫ই সেপ্টেম্বর তদন্ত করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক নুরে আলম বলেন, আমি বিদ্যালয়ে যোগদান করেছি প্রায় চার মাস হলে। এর মধ্যে মনোরঞ্জন ধরকে নিয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। ঐ দিন বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের উপস্থিতি কিছু শিক্ষার্থী মৌখিকভাবে কিছু অভিযোগ করেন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে মনোরঞ্জন ধর বলেন, শিক্ষার্থীদের ভুল বোঝানো হয়েছে। শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার কোন অভিযোগ নেই। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে আমাকে তাদের মুখোমুখি করেছে। এই ঘটনার মাষ্টার মাইন্ড বিদ্যালয়ের শিক্ষক আরিফ হোসেন ও আবদুল গফুর সরকার। আমি ন্যায় বিচারের অপেক্ষায় রয়েছি।

www.bbcsangbad24.com

আরও দেখুন আমাদের সাথে......

More From Author