নভেম্বর,২৯,২০২৩
জবি প্রতিবেদক:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হকের মৃত্যুর পর উপাচার্য পদটি শূন্য হয়েছে। তিনি প্রয়াত হওয়ায় এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনায়, কে হচ্ছেন দেশের অন্যতম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নতুন অভিভাবক।
শিক্ষার্থীরা জানায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় যোগ্য একজন অভিভাবক হারিয়েছে। শিক্ষার্থী হিসেবে তার কাছে যেকোনো সময় যেকোনো বিষয়ে গেলে সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে শুনতেন। প্রায়ই তিনি শিক্ষার্থীদের নিজের সন্তানের মতো করে জীবন ও ক্যারিয়ার নিয়ে বিভিন্ন আদেশ-উপদেশ দিতেন।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কাজের অগ্রগতি ঠিক রাখতে তারা শিগগিরই নতুন উপাচার্য চান। পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক শিক্ষকদের চাওয়া, জবি শিক্ষকদের মধ্য থেকেই আসুক পরবর্তী উপাচার্য।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বড় একটি অংশের চাওয়া- জবি থেকেই উপাচার্য কিংবা কোষাধ্যক্ষের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোয় নিয়োগ হোক। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষক সমিতিও এ দাবি জানিয়ে আসছে। এখন পদটি শূন্য হওয়ায় তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও শিক্ষককে এ পদে নিয়োগ দেওয়া হোক।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন শতাধিক অধ্যাপক রয়েছেন। এর মধ্যে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক আছেন ৩০ থেকে ৩৫ জন। আমরা চাই এর মধ্য থেকেই উপাচার্য নিয়োগ হোক। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সবার একই চাওয়া। উপাচার্য প্রয়াত হয়েছেন, এটা সরকারের সংশ্লিষ্টরা নিশ্চয়ই অবগত আছেন। তাদের বিবেচনায় যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ পাবেন।
অনুজীববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. মো. জাকারিয়া মিয়া বলেন, যারা পদের জন্য দৌড়াদৌড়ি করতেছে তাদেরকে তো আগে ফ্রেশ হতে হবে কেননা প্রয়াত উপাচার্য স্যার মারা যাওয়ার কারণে অনেক ধরনের নেতিবাচক দিক সৃষ্টি হয়েছে। যিনি উপাচার্য হিসেবে আসুক তার অধীনে সুন্দর ভাবে কাজ করব।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো লুৎফর রহমান বলেন, আমরা বিবৃতি দিয়ে উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পদ দুটিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চেয়েছি।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী বলেন, ভিসি স্যার মারা যাওয়ার কারণে আমরা গভীর ভাবে শোকাহত। বিশ্ববিদ্যালয়টির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো.কামালউদ্দিন আহমদ দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করছেন এবং আমি চাই স্যারকে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হোক। এছাড়াও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিনিয়র অধ্যাপকরা আছেন তাঁদেরকে দায়িত্ব দিলেও আমরা আনন্দিত হব।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগে উপাচার্য অসুস্থ থাকায় কোনো সিন্ডিকেট সভা হয়নি। কিছুদিন আগে অনলাইনে হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে যায়। এদিকে প্রতিষ্ঠানটিতে নেই উপ-উপাচার্য পদও। তাই দীর্ঘদিন অভিভাবকহীন হয়ে থাকলে অনেক কাজ স্থবির হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিন বলেন, ‘উপাচার্য অসুস্থ থাকার সময় থেকেই সিন্ডিকেট সভা হচ্ছে না। তাছাড়া নানা ধরনের প্রশাসনিক কাজও বন্ধ হয়ে আছে। একটা বিশ্ববিদ্যালয় এভাবে চলতে পারে না। আমি ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্টদের কাছে বলেছি উপাচার্য নিয়োগের ব্যাপারে যাতে তারা দ্রুত কথা বলে।’
উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে অধ্যাপক ইমদাদুল হকের ক্যান্সার ধরা পড়ে। উন্নত চিকিৎসা নিতে গত ১২ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে যান তিনি। পরে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তিনি ১২ অক্টোবর দেশে ফিরে আসেন। তবে ১১ নভেম্বর (শনিবার) ভোরে রাজধানীর বিআরবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
www.bbcsangbad24.com