সেপ্টেম্বর ২৯,২০২৪
স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ
মুন্সিগঞ্জে মাত্র কয়েক বছরে শূন্য থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক বনেছেন আমিনুর রহমান হারুন শিকদার। একজন ইলেক্ট্রিক্যাল মোকানিকের ছেলে হারুন এক সময় তার পরিবারের ভরণ-পোষণ জোগাতেই হিমশিম খেতেন। হঠাৎ তার এমন বিত্তশালী হওয়া রূপকথার গল্পকেও যেন হার মানায়। স্থানীয়দের দাবি, টাকা বানানোর ম্যানিশ হারুন শিকদার। মন্ত্রীর কয়েক কোটি টাকার গাড়ি এখনো তার বাড়িতে রয়েছে। এছাড়া জমি জবর দখল, সালিশ বৈঠক, থানায় তদবিরসহ নানা অপরাধ-দুর্নীতিতেও জড়িত এই হারুন শিকদার।
হিন্দুদের সম্পত্তি জবর দখল, মতি সরকারের সম্পত্তি জবর দখল করে নেয় এই ভূমিদস্যু। সোহেলদের জমি, ১বিঘা ও জুয়েল সরকারদের জবর দখল করেছে। তোফাজ্জল তাতীদের জমি দখল। মোক্তারের জমি দখল, আরিফ দেওয়ান, সুরুজকে নাম মাত্র দাম দিয়ে জোর করে দখল করে নেয় তাদের সম্পত্তি।
১৯৯০ সালে মালয়শিয়া যাওয়ার মধ্যে দিয়ে তার ভাগ্যের চাকা ঘুরতে থাকে। বাবার আ: সামাদ এলজিআরডির সাধারণ ইলেক্ট্রিক্যাল মেকানিকের সম্পত্তি বিক্রি করে ও গ্রামের সমিতি থেকে সুদে টাকা নিয়ে ছেলে হারুন শিকদারকে মালয়শিয়া পাঠান। বর্তমানে হারুন শিকদার কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক। নামে বেনামে ৫০০ একর সম্পত্তির মালিক বনে গেছেন তিনি। সম্পত্তির মধ্যে নিজের নামে, স্ত্রীর নামে ও শ্বশুরের নামে দলিল করেছেন। টানা হেচড়ার মধ্যে চলতো হারুন শিকদারের বাবার সংসার। ঘরে রয়েছে সৎ মা।
বিলাসবহুল অত্যাধুনিক বহুতল ভবন ২ একর সম্পত্তির উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। সংখ্যালুগু গ্রাম পুলিশ হিরা লালের পরিবারকে তাড়িয়ে দিয়ে বাড়িটি জবর দখল করে নেন ভূমিদস্যু হারুন শিকদার। ঢাকার মানিকনগরেও ৬তলার একটি বিলাস বহুল বহুতলবাড়ি রয়েছে তার। চর বাউশিয়া মৌজায় তার সম্পদক রয়েছে ৩০০ একরের মতো। বাউশিয়া মৌজায় ২০০ একর প্রায়। মধ্যম বাউশিয়া মৌজায় রয়েছে ১০ একর। পূর্বচক মৌজায় রয়েছে ৫বিঘা সম্পতি।
ঢাকায় নামে বেনামে বহু প্লট রয়েছে যার মূল্য শত কোটি টাকা। ব্যাংকে রয়েছে কয়েকশ কোটি টাকা। বিশেষ প্রক্রিয়া করে বাড়িতেই কালো টাকার পরিমান হাজার কোটি। হাজার কোটি টাকার মালিক কিভাবে বনে গেলেন? আলাদিনের চেরাগ তো আর তিনি পাননি। তাহলে কিভাবে কোন পন্থায় জিরো থেকে হিরো বনে গেলেন এবং এত অবৈধ সম্পদের মাীলক বনে গেলেন তা খতিয়ে দেখার সময় এসেছে।
জানা যায়, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার পুরান বাউশিয়া গ্রামের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর ছেলে হারুন শিকদার। ১১ বছর আগে তৎকালীন মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার বাসিন্দা মহিলা ও শিশু প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা ইন্দ্রিরার টাকার মেশিন হারুন শিকদার। তার সাথে সম্পর্কের পরই তার টাকার পাহাড় দ্রæত গতিতে বেড়ে যায়।
আবুল খায়ের শিকদারের মামাতো ভাই মনাইকান্দি গ্রামের শাহ কামাল। শাহ কামলাকে ছুরি মেরে গুরুতর জখম করেছিল হারুন শিকদার। সেই আঘাতে কয়েক বছর পরে শাহ কামালের মৃত্যু হয়।
হারুন শিকদার মাদক গ্রæপ নিয়ন্ত্রনকারী ও সন্ত্রাসী নিয়ন্ত্রন করে পুরো গজারিয়া এলাকায় ত্রাশের রাজত্ব কায়েম করেছেন।
তার সন্ত্রাসী বাহিনীর মধ্যে শাওন (২৫), বাদল (৫০), আমিরুল (৩৫), শহীদ প্রধান (৩৫), বিল্লাল শিকদার (৪০), চরবাউশিয়া গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম তুহিন আলিফসহ আরো ৮/৯জন সদস্য রয়েছে। এই বাহিনী যাকে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করা, মারধর করা, হেনেস্তা করে অপহরণ করে ছিনতাই করারও অভিযোগ রয়েছে। সাংবাদিক জসিমের উপর তিন তিনবার হামলা করেছে হারুন শিকদারের নিয়ন্ত্রিত এই সন্ত্রাসী বাহিনী। সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম নয়ন ও কামরুল ইসলামও এই সন্ত্রাসী গ্রæপের দ্বারা হামলার শিকার হয়েছে। সিরাজুল ইসলাম দেওয়ান, আনোয়ার হোসেন শিকদার, নুর উদ্দিন প্রধানকে অস্ত্র ঠেকিয়ে মারধর করে। সাংবাদিক নয়নকে মারধর করতে দেখেছিল এবং স্বাক্ষী দিয়েছিল তাই সাক্ষী সাত্তারকে তুলে নিয়ে যায় এই সন্ত্রাসী গ্রæপ। চর বাউশিয়ার সোরাবকে মারধর করে রক্তাক্ত জখম করে এবং মেরে ফেলার হুমকি দেয়। হারুন শিকদারের এই সন্ত্রাসী বাহিনীটির কাছে গজারিয়া বাসি অসহায় হয়ে পড়েছে। কেউ কিছু বলতে সাহস পাচ্ছে না। তার এই ক্ষমতার উৎস কোথায়? সাবেক মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা ইন্দ্রিরার সাড়ে তিন কোটি টাকার গাড়িটি এখনো তার বাড়িতে পরিত্যক্তভাবে পরে আছে।
এ ব্যাপারে আমিনুর রহমান হারুন শিকদার সাংবাদিকদের বলেন আমি অনেক ব্যস্ত আছি। এক ঘন্টা পরে ফোন দেন।
www.bbcsangbad24.com